আপনি কি পড়েন?
অনেক AMIE শিক্ষার্থী শিক্ষাগত যোগ্যতাকে নিচের প্যাটার্নে ফেসবুকে কিংবা ব্যক্তিগত আলাপ পরিচয়ে ব্যবহার করেঃ
[1] B.Sc. Engineering (AMIE) Under BUET
[2] B.Sc. in Mechanical Engineering (AMIE - BUET)
[3] B.S.C in Civil Engineering, AMIE, Dhaka
[4] AMIE University under of BUET.
[5] Bsc in Electrical & Electronics Engineering
[6] B.Sc in Mechanical Engineering
[7] B.Sc. Student
[8] B.Sc. in Eletrical and Electronic Engineering (EEE)
উপরের প্রত্যেকটি প্যাটার্ন , আপনার জ্ঞানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আপনি একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার (এ,এম,আই,ই পরীক্ষা পাসের মাধ্যমে) হওয়ার পরও যদি, এভাবেই নিজেকে পরিচয় দেন, কিংবা কোথাও লেখেন আপনার নামের সাথে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে, সেটি দুটো বিষয়কে নির্দেশ করেঃ
[১] আপনি মিথ্যা লিখছেন / আপনি মিথ্যা বলছেন !
[২] আপনি সঠিকভাবে লিখতে জানেন না। / আপনি সঠিকভাবে বলতে জানেন না !
দুটোই আপনার জন্য অসম্মানজনক। কখনোই এমন কোন ডিগ্রী লিখবেন না, যার সার্টিফিকেট আপনি অর্জন করেননি। যেমন আপনার সার্টিফিকেটে যদি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং (B.Sc. Engg.) লেখা থাকে, তাহলে, আপনি আপনার সিল, আপনার নেমপ্লেট, আপনার ফেসবুক প্রফাইলে কিংবা ব্যাক্তিগত আলাপ পরিচয়ে B.Sc. Engineering ডিগ্রীর কথা উল্লেখ করুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি হওয়া সত্ত্বেও নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী করলে, M.S ডিগ্রী দেওয়া হয়। এখন আপনি বলুন, সেকি কখনো, M.Sc. Engineering লিখবে??? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর M.S ডিগ্রী, বিভিন্ন সরকারী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের M.Sc. Engineering ডিগ্রীর Equivalent(কারন ৩৬ ক্রেডিট, দের বছরের প্রোগ্রাম যার মধ্যে ১৮ ক্রেডিট এর থিসিস এবং ১৬ ক্রেডিটের ৬টি থিওরি কোর্স (প্রতিটি ৩ ক্রেডিটের))। তাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের M.S ডিগ্রী ধারির যেমন কখনোই M.Sc. Engineering লেখা সঠিক নয়, তেমনি, "Graduation" শব্দ উল্লেখিত সার্টিফিকেটধারী AMIE স্টুডেন্টদেরও B.Sc. in EEE ফর্মে লেখা বা পরিচয় দেওয়া সঠিক নয়। সেটা নিজেকেই অবমূল্যায়ন করার শামিল। আপনি বরং গর্বের সাথেই বলুন, "আমি EEE তে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছি বুয়েটে AMIE পরীক্ষা প্রদান করে"।
যেসকল শিক্ষার্থী এ,এম,আই,ই পাশ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে নিম্নরুপে লেখা উচিতঃ
Engr. Md Abdus Samad
Graduation in Electrical & Electronic Engineering (EEE)
AMIE (Section A & B)
The Institution of Engineers, Bangladesh (IEB)
যেসকল শিক্ষার্থী এ,এম,আই,ই পড়ছেন, তাদের ক্ষেত্রে নিম্নরুপে লেখা উচিতঃ
Md Abdus Samad
Graduation in Electrical & Electronic Engineering (EEE) [Pursuing]
AMIE (Section A & B)
The Institution of Engineers, Bangladesh (IEB)
আপনি যদি একজন এ,এম,আই,ই স্টুডেন্ট হন, এবং ধরুন, কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করলো,
১। আপনি কি করেন?
আমি ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্রাজুয়েশন করছি।
২। কোথায়?
পরীক্ষাগুলো হয় বুয়েটে/রুয়েটে/চুয়েটে/কুয়েটে আর সার্টিফিকেট দেয়
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ বা আইইবি ।
৩। এটা কি বা কীভাবে? পরীক্ষা নেয় বুয়েট, আর সার্টিফিকেট দেয় আইইবি ! বুঝলাম না ঠিক !
স্কুলে পড়লে আপনি যেমন পড়েন একটি স্কুলে , এসএসসি পরীক্ষা হয় বিভিন্ন পরীক্ষার সেন্টারে, আর সার্টিফিকেট দেয় শিক্ষাবোর্ড, তেমনি, এটার পরীক্ষা হয় বুয়েটে, আর সার্টিফিকেট দেয় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ বা আইইবি ।
৪। এ,এম,আই,ই -র কথা শুনেছি, এটা কি তাই?
হ্যাঁ, এটা তাই, আর এটা মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং মেম্বারশিপের পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমমান। অর্থাৎ এটা পাশ করা মানেই হলো - ব্যাচেলর ডিগ্রী ধারী প্রকৌশলীর মতই সকল ধরণের চাকুরীর সুবিধা পাওয়া যাবে, কিংবা অন্যান্য যেসকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেগুলো পাওয়া যায়।
Royal Charter 1940 দ্বারা Incorporated হওয়ার পর, 1948 সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং মেম্বার শিপের এই পরীক্ষা চালু হয়েছে যার মাধ্যমে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে হাজার হাজার প্রকৌশলী। ১৯৪৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টীর অধীনে B.Sc. Engg. চালু হয় তৎকালীন আহসানউল্লাহ্ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যা ১৯৪৮ সালে স্বীকৃতি পায় পূর্ব পাকিস্তান সরকারের নিকট থেকে।
তাই, বলা যায়, একই সাথে AMIE পরীক্ষা পাশের মাধ্যমে Graduate Engineer হওয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Bachelor Degree অর্জনের মাধ্যমে Graduate Engineer হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। ১৯৬২ সালে East Pakistan University of Engineering & Technology (EPUET) এবং ১৯৭১ সালে BUET নামের প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষায় অগ্রদূত হলেও AMIE পরীক্ষা পদ্ধতির বয়স এবং বাংলাদেশে আন্ডারগ্রাজুয়েশন লেভেল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ প্রাপ্তির বয়স - দুটোই সমান ।
তাই,
"AMIE পরীক্ষার মাধ্যমে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর" - এটা গর্বের সাথেই বলুন। মানুষ চেনে না বলে, আপনি B.Sc. Engg. ডিগ্রী লিখবেন, বা বলবেন, সেটা এক প্রকার প্রতারনা, এবং AMIE - কে চেনানোর পরিবর্তে আপনি লুকিয়ে ফেললেন ... তাহলে, আপনি কীভাবে আশা করছেন, AMIE কি, সেটা মানুষ জানবে???
তাই, আজ থেকে, আর AMIE পড়ছেন, এটা বলতে লজ্জা করবেন না, গর্ব নিয়েই বলুন,
"আমি BUET-এ AMIE পরীক্ষা নামের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং (মেম্বারশিপের) পরীক্ষার মাধ্যমে EEE তে গ্রাজুয়েশন করছি" (পরীক্ষার কেন্দ্র উল্লেখ করলে, অনেকের বুঝতে সুবিধা হয়, এবং Quality নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয় বিধায় উল্লেখ করুণ) ।
Post: 03/10/2016